টেলিফোনটা বেজেই চলছে। রনি জানে এটা জীবনের ছোটবেলার বান্ধবী রিয়ার ফোন। কিন্তু জীবন একটা কাজে আজ বাসার বাইরে। রনি কি করবে, বুঝতে পারছে না। রনি টেলিফোনে কখনো কারও সাথে কথা বলে নি। তাকে ফোন দেওয়ার মতো বিশেষ কেউ ও নেই। রনি অতি দরিদ্র পরিবারের একমাত্র সন্তান। অনেক ছোট থাকতেই রনির বাবা পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করছে। রনির মা অনেক কষ্ট করে ছেলেকে মানুষ করেছে। জীবন রনির একমাত্র ঘনিষ্ঠ বন্ধু। আজকে এই জীবনের জন্যই রনির জীবনটা অন্ধকারে হারিয়ে যায় নি। রনি জীবনদের বাসায় থেকেই পড়াশুনা করছে। জীবনের জীবনটা রনির বিপরীত। জীবন তার বড়লোক বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। জীবনের বাবা-মা রনিকে নিজের ছেলের মতোই দেখে। রনি অতি মেধাবী ছাত্র এবং দেখতে রাজপুত্রের মতো। ফোনটা এখনোও বেজেই চলেছে। রনি কাঁপাকাপা হাতে ফোনের রিসিভারটা কানে ধরলো। ফোনের অপরপ্রান্ত থেকে অতি মিষ্টি একটা গলা বলে উঠলো হ্যালো, কি রে ফোন ধরতে এতো সময় লাগে? রনি মন্ত্রোমুগ্ধ হয়ে চুপ করে মেয়েটির কথা শুনতে লাগলো। একটা মানুষের কন্ঠ যে এতো মিষ্টি হতে পারে রনির আগে তা জানা ছিলো না। ঐ প্রান্ত থেকে আবার বলে উঠলো কি ব্যপার কে আপনি? কথা বলছেন না কেন? হ্যাল্লো কথা বলুন। রনি তো তখন ঐ প্রান্তের কথার মিষ্টতায় সম্মোহিত। মেয়েটি আবার বলে উঠলো আপনি কে বলছেন? চুপ করে আছেন কেন? আজব তো!!! এই বলে মেয়েটি ফোন রেখে দেয়। এরপর জীবনের কাছে রনি সম্পর্কে সব কিছু শুনে রিয়ার এক ধরনের মায়া অনুভব হয় রনির জন্য। এইটা কি শুধুই মায়া নাকি অন্যকিছ???
😊
😊
রনি আর রিয়ার মধ্যে এখন প্রায় প্রতিদিনই ল্যান্ডফোনে কথা হয়। রিয়া কিভাবে এতো গুছিয়ে কথা বলে তা রনির কাছে এক বিস্ময়। এভাবে ১মাস কথা বলার পর ওরা সিদ্ধান্ত নেয় দেখা করার। রিয়া রনিকে বসুন্ধরায় আসতে বলে। আর বলে ওরসাথে ওর পাঁচটা বান্ধবী থাকবে। তখন রনি ও বলে ঠিক আছে আমার সাথে ও পাঁচটা বন্ধু থাকবে। ওরা সবাই মিলে সিনেপ্লেক্স এ সিনেমা দেখার সিদ্ধান্ত নেয়। নির্ধারিত দিনে রনি ওর ভার্সিটির পাঁচটা বন্ধু নিয়ে বসুন্ধরায় চলে আসে। যথারিতী রিয়া ও ওর পাঁচটা বনধবীকে নিয়ে হাজির হয়। রিয়া দেখতে খুব আহামরি সুন্দরী না তবে একেবারে দেখতে খারাপ ও না। খুব বড়লোক বাবার একমাত্র কন্যা রিয়া। রিয়াকে দেখার পর রনির বন্ধুরা একেকজন একেক রকম মন্তব্য করে।(অবশ্যই চুপিসারে)। তখন রনি ওর ফ্রেন্ডদের একপাশে ডেকে নিয়ে বলে দোস্ত এই মেয়েকে ছাড়া আমার চলবে না। তখন রনির ফ্রেন্ডরা বলে তুই যদি রিয়াকে বউ হিসাবে মানতে পারিস তা হলে আমিদের তো তাকে ভাবি হিসাবে মানতে কোন আপত্তি নেই। তোর লাইফ তুই কিভাবে লিড করবি তা তোর ব্যাপার। এরপর ওরা সবাই মিলে একসাথে সিনেমা দেখলো। সিনেমা দেখা শেষে রনি আর রিয়ার ফ্রেন্ডরা ওদের একান্তে কথা বলার সুযোগ করে দিলো। রিয়া ওর সাথে একটা প্যাকেট নিয়ে এসছে। প্যাকেটটা ও রনির দিকে ঠেলে দিয়ে খুলতে বললো। রনি প্যাকেটটা খোলার পর দেখলো তার ভিতর একটা দামী নোকিয়া মোবাইল সেট। এতো দামী উপহার দেখে রনি তা নিতে অসম্মতি জানালো। তখন রিয়া রনিকে বললো তুমি যদি আমার উপহার গ্রহন না করো তা হলে বুঝে নিব তুমি আমাকে ভালোবাসো না। অগত্যা রনি উপহারটি গ্রহন করলো। রনি তখন ওর পকেটে হাত দিয়ে দেখলো একটা সেন্টার ফ্রেশ। রনি ওইটাই রিয়ার হাতে গুজে দিয়ে বললো, আমার কাছে তো এই মুহূর্তে এইটা ছাড়া দেওয়ার মতো কিছু নাই। রিয়া তখন সেন্টার ফ্রেশটা চাবাতে চাবাতে বললো, তুমি আমাকে ভালোবেসে যতো ছোট উপহারই দেও না কেন তা আমার কাছে অনেক কিছু। রিয়ার এই কথা শোনার পর রনির চোখটা ছলছল করে উঠলো। ওদের প্রথম দেখার পর্বটা এভাবে শেষ হলো। এরপর রনির জীবনে আমূল পরিবর্তন এলো। রনির তখন নিজেকে সব থেকে সুখি মানুষ বলে মনে হতে লাগলো। এরপরের ১টা বছর যে রনির কিভাবে কেটে গেল টেরই পেল না। কারন রিয়া রনির সব অপূর্নতাকে পূর্নতা দিয়েছে। ঠিক এক বছর পর হঠাৎ রিয়াকে আর ফোনে পেল না রনি। রিয়াকে খুঁজতে ওর বাসায়ও চলে গেলো। রিয়ার বাবা মা দুজনেই তখন দেশের বাইরে। বাসায় যারা ছিলো কেউ রিয়ার কোন খোঁজ দিতে পারলো না। রনি র জীবনে হঠাৎ করে যেমন অনাবিল সুখ এসেছিলো ঠিক তেমনি করেই রনির কাছে তার জীবনটা কষ্টের জোয়ারে ভেসে যাচ্ছিলো। ১ টা মাস রিয়ার সাথে রনির কোন যোগাযোগ নাই। যখন রনি আর কষ্টের তিব্রতা আর সহ্য করতে পারছিলো না, ঠিক ঐ দিনই একটা আননোন নাম্বার থেকে রনির মোবাইলে ফোন আসল। ফোনটা ছিলো রিয়ার।
❤❤❤
❤❤❤
রিয়ার মিষ্টি কন্ঠটা শোনার পর রনির জমে থাকা এই কয়েক দিনের দুঃখ, কষ্ট, রাগ, অভিমানের বরফ নিমিষেই গলে গেল। রিয়া বলল, তুমি ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করছো না কেন? উত্তরে রনি বললো এখন থেকে ঠিকমতো করবো। আমাকে একা ফেলে কোথায় হারিয়ে গিয়েছিলে? কেন আমাকে এতো কষ্ট দিলে? রনি অনুযোগের সুরে জানতে চায়। তখন রিয়া বলে, আমি দেখতে চেয়েছিলাম তুমি আমাকে কতোটা ভালোবাসো।
রনির জীবনটা আবার গতি পেল। সব কিছু খুব ভালোভাবেই চলছিল। ৬মাস পর
আবার রিয়া নিখোঁজ। রনি পরিচিত এমন কোন জায়গা নেই যেখানে রিয়ার খোঁজ করে নি।
কিন্তু রিয়ার খোঁজ কোথাও পাওয়া গেল ন। রিয়ার মোবাইলটাও বন্ধ। রনির জীবন
আবার থমকে দাড়ালো। তার কিছুই ভালো লাগে না। তার সব ভাবনার ভিতরেই রিয়া চলে
আসে। রনি ভাবতে থাকে কেন এমন করলো রিয়া? কিন্তু এর উত্তর রনি খুঁজে পায়
না। রনির অসম্ভব রাগ হতে থাকে রিয়ার উপর।
এরই মধ্যে ২মাস কেটে যায়। রিয়ার কোন খোঁজই রনি পায় না। রনি এবার পাগলপ্রায় অবস্থা। সে তার বন্ধুদেরকে নিয়ে রিয়া যে এলাকায় থাকতো ঐ এলাকার প্রত্যেক বাড়িবাড়ি গিয়ে খোঁজ করা শুরু করলো। অনেকের অনেক অপমান ও কটু কথা সত্বেও রনি খোঁজ চালিয়ে গেল। একটা সময় এস রনির বন্ধুরাও হাল ছেড়ে দিল। তারা রনিকে বললো দোস্ত এইভাবে খুঁজে পাওয়া সম্ভব না। রনি এখন কি করবে বুঝতে পারছে না। তবুও যে করেই হোক রিয়াকে তার খুঁজে বের করতেই হবে। রনি তার বন্ধুদেরকে শেষবারের মতো অনুরোধ করে সিলেট যাওয়ার জন্য। কারন রনির মন বলছে রিয়াকে সিলেটের চা বাগানে পাওয়া যাবে।
রনি এবং রনির পাঁচ বন্ধু এখন সিলেটের চা বাগানে। রিয়াকে খুঁজে বের করার জন্য। ওরা সারা চা বাগান তন্নতন্ন করে খুজেঁ রনির অনুরোধে। কিন্তু কোথাও রিয়ার দেখা পায় না। সবাই খুব ক্লান্ত। রনি বিষন্ন হয়ে বসে আছে। রনির বন্ধুরা ওকে নানাভাবে সান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করে। এক বন্ধু রনিকে বলে এখন যদি ভাবির দেখা পাস মুখে ঠাসঠাস করে চর দিতে পারবি? রনি চিৎকার করে বলে ওঠে অবশ্যই পারবো। কি মনে করে ও আমাকে? আমি কি মানুষ না? আমি কি রোবট? এবার ও সামনে আসুক। দেখিস তোরা আমি কি করি। রনি এই কথা গুলো বলছে আর ওর চোখ থেকে পানির ঝর্নাধারা বইছে।
❤
❤
হঠাৎ রনির পেছন দিক থেকে একটা মিষ্টি কন্ঠ বলে উঠলো, কি তুমি সবার সামনে আমাকে চড় মারতে চাও? তুমি যদি আমাকে চড় মেরে শান্তি পাও তা হলে মারো। রনি দড়িয়ে ঘার ঘুরিয়ে ফিরে তাকাতেই হোঁচট খেয়ে পরে গেল। আবার দারাতে গেল আবার পরে গেল। এবার রিয়া এসে রনির হাতটা ধরে উঠালো। উঠানোর পর রনির কানের কাছে মুখ এনে বললো কি মারবে না চড়?? রনি সব রাগ।, অভিমান ভুলে রিয়াকে জরিয়ে ধরলো। রনির বন্ধুদের করতালির শব্দতে ওদের হুশ ফিরলো।
❤
# কিছু কথা না বললেই নয়। গল্পটা ২০১২সালে আমাকে কেউ বলেছিল। তার ভাষ্যমতে এটা বাস্তব ঘটনা। কি এক অজানা কারনে সে নিখোঁজ। আমি আজ ও তাকে খুঁজছি তার মুখ থেকে নতুন আরও অনেক গল্প শোনার জন্য।
এরই মধ্যে ২মাস কেটে যায়। রিয়ার কোন খোঁজই রনি পায় না। রনি এবার পাগলপ্রায় অবস্থা। সে তার বন্ধুদেরকে নিয়ে রিয়া যে এলাকায় থাকতো ঐ এলাকার প্রত্যেক বাড়িবাড়ি গিয়ে খোঁজ করা শুরু করলো। অনেকের অনেক অপমান ও কটু কথা সত্বেও রনি খোঁজ চালিয়ে গেল। একটা সময় এস রনির বন্ধুরাও হাল ছেড়ে দিল। তারা রনিকে বললো দোস্ত এইভাবে খুঁজে পাওয়া সম্ভব না। রনি এখন কি করবে বুঝতে পারছে না। তবুও যে করেই হোক রিয়াকে তার খুঁজে বের করতেই হবে। রনি তার বন্ধুদেরকে শেষবারের মতো অনুরোধ করে সিলেট যাওয়ার জন্য। কারন রনির মন বলছে রিয়াকে সিলেটের চা বাগানে পাওয়া যাবে।
রনি এবং রনির পাঁচ বন্ধু এখন সিলেটের চা বাগানে। রিয়াকে খুঁজে বের করার জন্য। ওরা সারা চা বাগান তন্নতন্ন করে খুজেঁ রনির অনুরোধে। কিন্তু কোথাও রিয়ার দেখা পায় না। সবাই খুব ক্লান্ত। রনি বিষন্ন হয়ে বসে আছে। রনির বন্ধুরা ওকে নানাভাবে সান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করে। এক বন্ধু রনিকে বলে এখন যদি ভাবির দেখা পাস মুখে ঠাসঠাস করে চর দিতে পারবি? রনি চিৎকার করে বলে ওঠে অবশ্যই পারবো। কি মনে করে ও আমাকে? আমি কি মানুষ না? আমি কি রোবট? এবার ও সামনে আসুক। দেখিস তোরা আমি কি করি। রনি এই কথা গুলো বলছে আর ওর চোখ থেকে পানির ঝর্নাধারা বইছে।
❤
❤
হঠাৎ রনির পেছন দিক থেকে একটা মিষ্টি কন্ঠ বলে উঠলো, কি তুমি সবার সামনে আমাকে চড় মারতে চাও? তুমি যদি আমাকে চড় মেরে শান্তি পাও তা হলে মারো। রনি দড়িয়ে ঘার ঘুরিয়ে ফিরে তাকাতেই হোঁচট খেয়ে পরে গেল। আবার দারাতে গেল আবার পরে গেল। এবার রিয়া এসে রনির হাতটা ধরে উঠালো। উঠানোর পর রনির কানের কাছে মুখ এনে বললো কি মারবে না চড়?? রনি সব রাগ।, অভিমান ভুলে রিয়াকে জরিয়ে ধরলো। রনির বন্ধুদের করতালির শব্দতে ওদের হুশ ফিরলো।
❤
# কিছু কথা না বললেই নয়। গল্পটা ২০১২সালে আমাকে কেউ বলেছিল। তার ভাষ্যমতে এটা বাস্তব ঘটনা। কি এক অজানা কারনে সে নিখোঁজ। আমি আজ ও তাকে খুঁজছি তার মুখ থেকে নতুন আরও অনেক গল্প শোনার জন্য।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন