রাতের বেলা সূর্য আর দিনের বেলা চাঁদ, শুধু তোমার জন্য দিয়ে দেবো সব বাদ। তুমি কি আমার জন্যে এর পরেও ফেলবে ফাঁদ? আমি কিন্তু করবো শেষ দানে কিস্তিমাত। #ছড়ার উৎস >রাতের বেলা নাকি সূর্য দেখতে পায়।
প্রখর রোদ্রের পিচঢালা রাস্তার উত্তাপ যানবাহনের কালো ধোঁয়ায় কালোকিত নগরী, রাস্তার পাশে ডাস্টবিনের ময়লার সুতীব্র গন্ধ, ভ্যাপসা গরম এখন আমার গায়েই লাগে না। কালো ধোঁয়ায় এখন আর দম বন্ধ হয় না। আর ডাস্টবিনের ময়লার গন্ধে এখন আর নাক ও আটকে রাখতে হয় না।
এই শোনো, অামার সামনে পরীক্ষা। তাই অামি চাই না পরীক্ষার অাগে অার তোমার
সাথে কোন যোগাযোগ রাখতে। অার শোনো তুমি এই সময়টায় কিন্তু অন্য কোনো মেয়ের
প্রেমে পরবা না। এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো শেষ করে মেয়েটা। তারপর খিলখিল করে
হেসে বলে, মনে থাকবে তো অামার কথা? ছেলেটা চুপ করে থাকে। কি বলবে ঠিক বুঝে
উঠতে পারে না। ছেলেটা সত্যিই মেয়েটাকে অনেক ভালোবাসে। তাই ছেলেটা মেয়েটির
শর্তে রাজি হয়। ছেলেটার মনে যে কি ঝড় চলছে তা সে মেয়েটাকে বুঝতে দেয় না।
ছেলেটা এখন সময়ের হাতে বন্দী। গল্পের ট্রাজেডীর শুরুটা ছিল এমন।
ভোরের বাহিরের বাতাসটা শরীরে লাগলে ঠান্ডা ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। সকালে গোসল
করতে গেলে গাঁ কাটা দিয়ে উঠছে। ও নারকেল তেল ও একটু একটু জমাট বাঁধতে শুরু
করছে। তার মানে শীত চলে অাসছে। বোঝো নাই ব্যাপারটা???
গতকালটা যে কখন গত হয়ে গেলো টেরই পেলাম না। খুব বেশি খুশি হয়ে যাওয়ার পর
টান্না( খুশির বিপরীত শব্দ) পেয়ে যাওয়া হয়তো তার একটা কারন হতে পারে। অতি
প্রয়োজনের সময় যে জিনিসটা কখোনই খুঁজে পাওয়া যায় না, প্রয়োজন শেষে কি এক
অদ্ভুত কারনে ঐ জিনিসটাই সবার আগে চোখে পড়ে যায়। আমার ১৫ বছর আগের কোন
প্যান্টের পকেটে যদি এক টাকার একখানা চকচকে নোট হঠাৎ এই ২০১৬ সালে পেয়ে
যাই, যে নোটটি আমি আতিপাতি করে অনেক খুঁজেছি কিন্তু কখনোই পাই নি। তা হলে
বোধ হয় খুশি হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু পরক্ষনেই যখন চিন্তা করে
দেখলাম যে, এই এক টাকায় এই যুগের দোকানদার তো একটা চকলেট ও দিবে না। তখনই
মনটা খারাপ হয়ে গেল। দোকানদারের কাছে হয়তো টাকাটার কোন মূল্য নেই কিন্তু
আমার কাছে টাকাটার মূল্য অমূল্য। এত সব তুল্য-মূল্যের হিসাব করতে করতে কখন
যে রাতটা শেষ হয়ে গেল টেরই পেলাম না। না আমি কোন স্বপ্ন দেখছি না,
দেখাচ্ছিও না। শুধু এইটুকু জানি, রাতের ক্রান্তিলগ্নই তো ভোরের সূর্যোদয়।
হোক না আরেকটা নতুন দিনের শুরু।
আমার কাছে স্বপ্ন মানে মনে হয়, মাল্টিপল কালারের পাওয়ার হাউজ। নানান বয়েসে, নানান সময়ে, নানান ক্ষনে যার শুধু কালার চেন্জ হয়। স্বপ্নভঙ্গ... আমার কাছে স্বপ্নভঙ্গ মানে হচ্ছে- সব কালার গুলো একত্রিত হয়ে
একটি কালারে পরিনত হওয়া। আমার কাছে সেই রঙটা কালো বলে মনে হয়। স্বপ্নভঙ্গ
হয়ে যাওয়া ঐ মানুষটা তখন তার ভবিষ্যৎ অন্ধকার ছাড়া আর কিছুই দেখতে পায় না।
তবে কারও স্বপ্নভঙ্গ হয়ে যাওয়া মানে এই নয় যে, সে নতুন করে আর কোন স্বপ্ন
দেখতে পারবে না। যখন সব রঙ ফিকে হয়ে যায় তখন ঐ মুহূর্তে স্বপ্নভঙ্গ হয়ে
যাওয়া মানুষটির হয়তো মনে হতে থাকে, তার জীবনের রঙটাও কালো অন্ধকারে আস্তে
আস্তে ঢেকে যাচ্ছে। তবে কালোরও হয়তো কিছু ভাল দিক আছে।
কালো রঙটা কিন্তু অন্য সব রঙের বাইরে নয়। অন্যান্য রঙের মতো তারও কিছু
নিজস্ব স্বকিয়তা আছে। গোধূলীলগ্ন থেকে রাত হওয়া অবধি একটু খেয়াল করলেই
দেখতে পাবেন কালো রঙের পরিরর্তনটা। সব থেকে ভালো ভাবে আপনি কালো রঙের রূপটা
অবলোকন করতে পারবেন অমাবস্যার কোন এক রাতে। তার মানে স্বপ্নভঙ্গ হয়ে
যাওয়ার মানে এই নয় যে, আপনার জীবন অমাবস্যার অন্ধকারের মতো ঢেকে যাচ্ছে।
আমার কাছে মনে হয় একটি স্বপ্নভঙ্গ হয়ে যাওয়া মানে হাজারও স্বপ্নের দ্বার
উন্মুক্ত হয়ে যাওয়া। স্বপ্নভঙ্গ হয়ে যাওয়ার ভয়ে আমরা হাজারো স্বপ্ন দেখা তো
ভুলে যেতে পারি না। তানা হলে হয়তো জীবনটাই থেমে যাবে। হ্যাঁ এইটাও ঠিক
রাতারতি তে আর সব স্বপ্ন পূরন হয়ে যাবে না। তবে অমাবস্যার ঘোর কালো অন্ধকার
কেটে নির্দিষ্ট সময় পর কিন্তু পৃথিবীটা পূর্নিমার আলোয়ও একসময় উদ্ভাসিত
হয়। তাই আমাদের সাদাকালো স্বপ্নগুলো অমাবস্যার কালোয় ঢেকে না যেয়ে
পূর্নিমার আলোর মতো আরও আলোকিত হয়ে উঠুক। আর সেই আলোকছটা রঙিন হয়ে ছড়িয়ে
পড়ুক সারাবিশ্বে।
থাকুক না ভালো লাগার মানুষগুলো তাদের মতো করে। যদি কিছু বলতে বা বোঝাতে যাই
হয়তো বোঝার থেকে ভুল ই বেশি বুঝবে। এই ক্ষেত্রে অপেক্ষাটাই শ্রেয় বলে মনে
হয় (ব্যক্তিগত মত)। হয়তো অপেক্ষার সমাপ্তি এই জীবনে কখনোই হবে না। তাই বলে ঐ
মানুষগুলোর প্রতি ভালোলাগা বা শ্রদ্ধাবোধ আগের মতোই কনসট্যান্ট থাকবে।
ছেলে : রান্নাঘরে ঢুকছেন কখনো? মেয়ে : জ্বী, আমি
নিজেই রান্না করি। ছেলে : মাসআল্লাহ। তা কখনো গরম
তেলের মধ্যে এক ফোটা পানি দিলে কেমন সাউন্ড হয় শুনছেন কখনো?
মেয়ে। : আপনি কি আমার সাথে
মজা করেন? ছেলে : দীর্ঘশ্বাস ফেলে... আপনার কাছে যেটা কমেডি আমার
কাছে ঐটা ট্রাজেডি।
কাউকে মন থেকে ভস্ম করে উড়িয়ে দিতে সাতটি কমার(,,,,,,,)বিপরীতে শুধুমাত্র
একটি দাড়ি(।) ই যথেষ্ট। ধরে নিলাম, আমি দাড়ি সে কমা। তার কাছে চাইছি আমি
নিঃসার্থ ক্ষমা। ভালো থেকো সবসময় তিলোত্তমা...
আপনার কি প্রচন্ড রকমের মন খারাপ? মনের মধ্য়ে কি নিকষ কালো মেঘ জমে আছে?
আমার কাছে কি মনে হয় জানেন? মন খারাপ বলে কিছু নেই। আপনি আপনার নিজের মনটা
ইচ্ছে করেই খারাপ করে রেখেছেন হয়তো। সেই জন্যেই মন খারাপ নামক ব্যাধি
আপনাকে আকড়ে ধরেছে। আপনার কিছু ভালো লাগছে না? জোর করে কিছু ভালো লাগার
চেষ্টা করার দরকার নাই। আমাদের চারপাশে ভালো ভালো উপকরনের কোন অভাব নেই।
শুধু আপনার অনুসন্ধানী চোখকে কাজে লাগান আর মনকে বুঝতে দিন। দেখবেন আপনার
মন এমনিতেই ভালো থাকবে। নিজে ভালো কাজের সাথে সম্প্রিক্ত থাকুন আর অন্যকেও
ভালো কাজের প্রতি অনুপ্রেরনা দিন। অন্য কেউ তা গ্রহন করুক আর বর্জন করুক,
দিনশেষে আপনার মনটা কিন্তু ভালো থাকবে।
কেউ আপনার সাথে ভয়ানক খারাপ ব্যবহার করলো। কিংবা যে ব্যবহারটা আপনি তার
কাছে আশাই করেন নি, সে হয়তো সেই খারাপ ব্যবহারটাই আপনার সাথে করে বসলো। তখন
আপনার মনটা বিষন্ন হওয়াই স্বভাবিক। আপনি যদি অতি বিচার বিশ্লেষন না করে
খালি চোখে কারনটা জানতে চান, তা হলে এর কারন দুটি। একঃ সে ইচ্ছে করেই আপনার
সাথে খারাপ ব্যবহার করেছে। দুইঃ আপনি যখন কোন বিষয় নিয়ে তার সাথে কথা
বলছিলেন অন্য কোন কারনে হয়তো তার মনটা ঐ মুহূর্তে তেতে ছিলো, যার ঝাঁঝ হয়তো
আপনার উপর ঝারছে। ইচ্ছে করেই যারা খারাপ ব্যবহার করে এটা তাদের
মজ্জাগতো অভ্যাস। আর যারা ইচ্ছে না করেই খারাপ ব্যবহার করে বসে তাদের কারন
"কারন দুই।" এখন কোন ব্যাক্তি যদি আপনার সাথে খারাপ ব্যবহার করে থাকে তা
হলে আপনি সবসময় ভাববেন ঐ বিশেষ মুহূর্তে হয়তো ঐ ব্যক্তির মনটা হয়তো অন্য
কারনে বিষিয়ে ছিলো। বাসায় বসে স্বমীর জন্য অপেক্ষায় থাকা গৃহবধূর জন্য হয়তো
বৃষ্টিটা উপভোগ্য হতে পারে কিন্তু বাসায় ফিরতে ব্যাকুল স্বমীর জন্য
বৃষ্টিটা বিরক্তি কর। একই বৃষ্টি কিন্তু আবস্থানভেদের কারনে তা দুজনের কাছে
দুরকম। তাই কারও অবানচিতো খারাপ ব্যবহারে মনকে যদি বিষন্নতার সাগরে ডুবে
না দিতে চান তাহলে সবসময় এইটা ভাবুন, আপনার তার সাথে কথা বলার জন্য হয়তো ঐ
সময়টা পারফেক্ট ছিলো না। আর হ্যাঁ মনকে বিষন্নতার হাত থেকে বাঁচাতে অনেক
পন্থা অবলম্বন করতে পারেন। খারপ পন্থাগুলো হয়তো সাময়িকভাবে কার্যকর হতে
পারে। কিন্তু তা কখনোই দীর্ঘস্থায়ি সমাধান নয়।
নতুন জিনিস অধিকাংশ ক্ষেত্রেই খুব ভালো লাগে। কারন অন্যরকম একটা চাকচিক্য,
জৌলস, ও সৌন্দর্য তার মধ্যে থাকে। এমনকি তার গন্ধেও নেশা ছড়ায়। নতুন জামা,
নতুন প্যান্ট এমনকি বড় বড় করকরে টাকার সুগন্ধি নোট সবসময়ই মনে একটা
ভালোলাগার অনুভূতি সৃষ্টি করে। তাই বলে, যে জিনিসটা পুরানো হয়ে যাবে তার
জন্য কি পড়ে থাকবে শুধুই অবহেলা, অবগ্গা? আপনার একটা সব থেকে নতুন প্রিয়
জামাটা যখন পুরানো হয়ে যাবে তখন জামাটা আপনি পড়বেন কি পড়বেন না তা আপনার
রুচির ব্যাপার। জামাটা পড়ার অযোগ্য হয়ছে বলে আপনি চাইলেই আপনার প্রিয়
পুরানো জামাটা ফেরিওয়ালার কছে অতি সস্তা মূল্যে বিক্রি করে দিতে পারেন।
আবার চাইলেই আপনি আপনার প্রিয় পুরানো জামাটা স্বযত্নে আলমারিতে তুলে রাখতে
পারেন। হয়তো জামাটা কখনোই আকাশচুম্বী এন্টিক হিসাবে বিক্রি হবে না। কিন্তু
জিনিসটা যদি আপনার কাছে প্রিয় হয়, পছন্দের হয় তা হলে তার দাম কখনো মূল্য
দিয়ে চুকানো যায় না।
টেলিফোনটা বেজেই চলছে। রনি জানে এটা জীবনের ছোটবেলার বান্ধবী রিয়ার
ফোন। কিন্তু জীবন একটা কাজে আজ বাসার বাইরে। রনি কি করবে, বুঝতে পারছে না।
রনি টেলিফোনে কখনো কারও সাথে কথা বলে নি। তাকে ফোন দেওয়ার মতো বিশেষ কেউ ও
নেই। রনি অতি দরিদ্র পরিবারের একমাত্র সন্তান। অনেক ছোট থাকতেই রনির বাবা
পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করছে। রনির মা অনেক কষ্ট করে ছেলেকে মানুষ করেছে। জীবন
রনির একমাত্র ঘনিষ্ঠ বন্ধু। আজকে এই জীবনের জন্যই রনির জীবনটা অন্ধকারে
হারিয়ে যায় নি। রনি জীবনদের বাসায় থেকেই পড়াশুনা
করছে। জীবনের জীবনটা রনির বিপরীত। জীবন তার বড়লোক বাবা-মায়ের একমাত্র
সন্তান। জীবনের বাবা-মা রনিকে নিজের ছেলের মতোই দেখে। রনি অতি মেধাবী ছাত্র
এবং দেখতে রাজপুত্রের মতো। ফোনটা এখনোও বেজেই চলেছে। রনি কাঁপাকাপা হাতে
ফোনের রিসিভারটা কানে ধরলো। ফোনের অপরপ্রান্ত থেকে অতি মিষ্টি একটা গলা বলে
উঠলো হ্যালো, কি রে ফোন ধরতে এতো সময় লাগে? রনি মন্ত্রোমুগ্ধ হয়ে চুপ করে
মেয়েটির কথা শুনতে লাগলো। একটা মানুষের কন্ঠ যে এতো মিষ্টি হতে পারে রনির
আগে তা জানা ছিলো না। ঐ প্রান্ত থেকে আবার বলে উঠলো কি ব্যপার কে আপনি? কথা
বলছেন না কেন? হ্যাল্লো কথা বলুন। রনি তো তখন ঐ প্রান্তের কথার মিষ্টতায়
সম্মোহিত। মেয়েটি আবার বলে উঠলো আপনি কে বলছেন? চুপ করে আছেন কেন? আজব
তো!!! এই বলে মেয়েটি ফোন রেখে দেয়। এরপর জীবনের কাছে রনি সম্পর্কে সব কিছু
শুনে রিয়ার এক ধরনের মায়া অনুভব হয় রনির জন্য। এইটা কি শুধুই মায়া নাকি
অন্যকিছ??? 😊 😊
রনি আর রিয়ার মধ্যে এখন প্রায় প্রতিদিনই ল্যান্ডফোনে কথা হয়। রিয়া কিভাবে
এতো গুছিয়ে কথা বলে তা রনির কাছে এক বিস্ময়। এভাবে ১মাস কথা বলার পর ওরা
সিদ্ধান্ত নেয় দেখা করার। রিয়া রনিকে বসুন্ধরায় আসতে বলে। আর বলে ওরসাথে ওর
পাঁচটা বান্ধবী থাকবে। তখন রনি ও বলে ঠিক আছে আমার সাথে ও পাঁচটা বন্ধু
থাকবে। ওরা সবাই মিলে সিনেপ্লেক্স এ সিনেমা দেখার সিদ্ধান্ত নেয়। নির্ধারিত
দিনে রনি ওর ভার্সিটির পাঁচটা বন্ধু নিয়ে বসুন্ধরায় চলে আসে। যথারিতী রিয়া
ও ওর পাঁচটা বনধবীকে নিয়ে হাজির হয়। রিয়া
দেখতে খুব আহামরি সুন্দরী না তবে একেবারে দেখতে খারাপ ও না। খুব বড়লোক
বাবার একমাত্র কন্যা রিয়া। রিয়াকে দেখার পর রনির বন্ধুরা একেকজন একেক রকম
মন্তব্য করে।(অবশ্যই চুপিসারে)। তখন রনি ওর ফ্রেন্ডদের একপাশে ডেকে নিয়ে
বলে দোস্ত এই মেয়েকে ছাড়া আমার চলবে না। তখন রনির ফ্রেন্ডরা বলে তুই যদি
রিয়াকে বউ হিসাবে মানতে পারিস তা হলে আমিদের তো তাকে ভাবি হিসাবে মানতে কোন
আপত্তি নেই। তোর লাইফ তুই কিভাবে লিড করবি তা তোর ব্যাপার। এরপর ওরা সবাই
মিলে একসাথে সিনেমা দেখলো। সিনেমা দেখা শেষে রনি আর রিয়ার ফ্রেন্ডরা ওদের
একান্তে কথা বলার সুযোগ করে দিলো। রিয়া ওর সাথে একটা প্যাকেট নিয়ে এসছে।
প্যাকেটটা ও রনির দিকে ঠেলে দিয়ে খুলতে বললো। রনি প্যাকেটটা খোলার পর দেখলো
তার ভিতর একটা দামী নোকিয়া মোবাইল সেট। এতো দামী উপহার দেখে রনি তা নিতে
অসম্মতি জানালো। তখন রিয়া রনিকে বললো তুমি যদি আমার উপহার গ্রহন না করো তা
হলে বুঝে নিব তুমি আমাকে ভালোবাসো না। অগত্যা রনি উপহারটি গ্রহন করলো। রনি
তখন ওর পকেটে হাত দিয়ে দেখলো একটা সেন্টার ফ্রেশ। রনি ওইটাই রিয়ার হাতে
গুজে দিয়ে বললো, আমার কাছে তো এই মুহূর্তে এইটা ছাড়া দেওয়ার মতো কিছু নাই।
রিয়া তখন সেন্টার ফ্রেশটা চাবাতে চাবাতে বললো, তুমি আমাকে ভালোবেসে যতো
ছোট উপহারই দেও না কেন তা আমার কাছে অনেক কিছু। রিয়ার এই কথা শোনার পর রনির
চোখটা ছলছল করে উঠলো। ওদের প্রথম দেখার পর্বটা এভাবে শেষ হলো। এরপর রনির
জীবনে আমূল পরিবর্তন এলো। রনির তখন নিজেকে সব থেকে সুখি মানুষ বলে মনে হতে
লাগলো। এরপরের ১টা বছর যে রনির কিভাবে কেটে গেল টেরই পেল না। কারন রিয়া
রনির সব অপূর্নতাকে পূর্নতা দিয়েছে। ঠিক এক বছর পর হঠাৎ রিয়াকে আর ফোনে পেল
না রনি। রিয়াকে খুঁজতে ওর বাসায়ও চলে গেলো। রিয়ার বাবা মা দুজনেই তখন
দেশের বাইরে। বাসায় যারা ছিলো কেউ রিয়ার কোন খোঁজ দিতে পারলো না। রনি র
জীবনে হঠাৎ করে যেমন অনাবিল সুখ এসেছিলো ঠিক তেমনি করেই রনির কাছে তার
জীবনটা কষ্টের জোয়ারে ভেসে যাচ্ছিলো। ১ টা মাস রিয়ার সাথে রনির কোন যোগাযোগ
নাই। যখন রনি আর কষ্টের তিব্রতা আর সহ্য করতে পারছিলো না, ঠিক ঐ দিনই একটা
আননোন নাম্বার থেকে রনির মোবাইলে ফোন আসল। ফোনটা ছিলো রিয়ার। ❤❤❤ ❤❤❤
রিয়ার মিষ্টি কন্ঠটা শোনার পর রনির জমে থাকা এই কয়েক দিনের
দুঃখ, কষ্ট, রাগ, অভিমানের বরফ নিমিষেই গলে গেল। রিয়া বলল, তুমি ঠিকমতো
খাওয়া-দাওয়া করছো না কেন? উত্তরে রনি বললো এখন থেকে ঠিকমতো করবো। আমাকে একা
ফেলে কোথায় হারিয়ে গিয়েছিলে? কেন আমাকে এতো কষ্ট দিলে? রনি অনুযোগের সুরে
জানতে চায়। তখন রিয়া বলে, আমি দেখতে চেয়েছিলাম তুমি আমাকে কতোটা ভালোবাসো।
রনির জীবনটা আবার গতি পেল। সব কিছু খুব ভালোভাবেই চলছিল। ৬মাস পর
আবার রিয়া নিখোঁজ। রনি পরিচিত এমন কোন জায়গা নেই যেখানে রিয়ার খোঁজ করে নি।
কিন্তু রিয়ার খোঁজ কোথাও পাওয়া গেল ন। রিয়ার মোবাইলটাও বন্ধ। রনির জীবন
আবার থমকে দাড়ালো। তার কিছুই ভালো লাগে না। তার সব ভাবনার ভিতরেই রিয়া চলে
আসে। রনি ভাবতে থাকে কেন এমন করলো রিয়া? কিন্তু এর উত্তর রনি খুঁজে পায়
না। রনির অসম্ভব রাগ হতে থাকে রিয়ার উপর।
এরই মধ্যে ২মাস
কেটে যায়। রিয়ার কোন খোঁজই রনি পায় না। রনি এবার পাগলপ্রায় অবস্থা। সে তার
বন্ধুদেরকে নিয়ে রিয়া যে এলাকায় থাকতো ঐ এলাকার প্রত্যেক বাড়িবাড়ি গিয়ে
খোঁজ করা শুরু করলো। অনেকের অনেক অপমান ও কটু কথা সত্বেও রনি খোঁজ চালিয়ে
গেল। একটা সময় এস রনির বন্ধুরাও হাল ছেড়ে দিল। তারা রনিকে বললো দোস্ত
এইভাবে খুঁজে পাওয়া সম্ভব না। রনি এখন কি করবে বুঝতে পারছে না। তবুও যে
করেই হোক রিয়াকে তার খুঁজে বের করতেই হবে। রনি তার বন্ধুদেরকে শেষবারের মতো
অনুরোধ করে সিলেট যাওয়ার জন্য। কারন রনির মন বলছে রিয়াকে সিলেটের চা
বাগানে পাওয়া যাবে।
রনি এবং রনির পাঁচ বন্ধু এখন সিলেটের
চা বাগানে। রিয়াকে খুঁজে বের করার জন্য। ওরা সারা চা বাগান তন্নতন্ন করে
খুজেঁ রনির অনুরোধে। কিন্তু কোথাও রিয়ার দেখা পায় না। সবাই খুব ক্লান্ত।
রনি বিষন্ন হয়ে বসে আছে। রনির বন্ধুরা ওকে নানাভাবে সান্তনা দেওয়ার চেষ্টা
করে। এক বন্ধু রনিকে বলে এখন যদি ভাবির দেখা পাস মুখে ঠাসঠাস করে চর দিতে
পারবি? রনি চিৎকার করে বলে ওঠে অবশ্যই পারবো। কি মনে করে ও আমাকে? আমি কি
মানুষ না? আমি কি রোবট? এবার ও সামনে আসুক। দেখিস তোরা আমি কি করি। রনি এই
কথা গুলো বলছে আর ওর চোখ থেকে পানির ঝর্নাধারা বইছে। ❤ ❤
হঠাৎ রনির পেছন দিক থেকে একটা মিষ্টি কন্ঠ বলে উঠলো, কি তুমি সবার
সামনে আমাকে চড় মারতে চাও? তুমি যদি আমাকে চড় মেরে শান্তি পাও তা হলে
মারো। রনি দড়িয়ে ঘার ঘুরিয়ে ফিরে তাকাতেই হোঁচট খেয়ে পরে গেল। আবার দারাতে
গেল আবার পরে গেল। এবার রিয়া এসে রনির হাতটা ধরে উঠালো। উঠানোর পর রনির
কানের কাছে মুখ এনে বললো কি মারবে না চড়?? রনি সব রাগ।, অভিমান ভুলে
রিয়াকে জরিয়ে ধরলো। রনির বন্ধুদের করতালির শব্দতে ওদের হুশ ফিরলো। ❤
# কিছু কথা না বললেই নয়। গল্পটা ২০১২সালে আমাকে কেউ বলেছিল। তার ভাষ্যমতে
এটা বাস্তব ঘটনা। কি এক অজানা কারনে সে নিখোঁজ। আমি আজ ও তাকে খুঁজছি তার
মুখ থেকে নতুন আরও অনেক গল্প শোনার জন্য।
❤❤❤ ❤❤❤
চড়ুই পাখিটির আজ মনটা বড়ই বিষন্ন। জন্মের পর মা খুব শখ করে ওর
নাম রেখেছিলো "তু"। কিন্তু তু এর জীবনের শখগুলো আজ বড্ড মলিন। বাসার সবাই
দল বেঁধে কাজের সন্ধানে বের হয়ে পরেছে। কিন্তু তু আজ বের হয় নি। সে ঘরে বসে
ঝিমাচ্ছে আর পুরনো দিনের স্মৃতিচারণ করছে।
তু ছোট থেকেই খুব রূপবতী। পাড়ার অল্প বয়স্ক যুবক চড়ুইরা তু এর
দিকে একটু অন্য রকম দৃষ্টি দিতো তু এর দৃষ্টি আকর্ষনের জন্য। কিন্তু তু এর
মনে কখোনই কেউ সেইভাবে দাগ কাটতে পারে নি। হঠাৎ তু এর পাড়ায় এক টিয়ে
পরিবারের আগমন ঘটলো। তারা ঐ পাড়ায় বসবাস শুরু করলো। ঐ টিয়ে পরিবারের
সর্বকনিষ্ঠ ছেলে, নাম তার চিটা। চিটার সাথে খুব অল্প দিনের মধ্যেই তু এর
খুবই ভালো বন্ধুত্বপূর্ন সম্পর্ক তৈরী হয়ে গেলো। এখন তু আর চিটা একসাথে
ঘোরে, একসাথে খেলে, একে অপরকে তারা সব কিছু শেয়ার করে। ইতিমধ্যে চিটা পাশের
পাড়ার এক টিয়া পরিবারের মেয়ে ইটির সাথে গভীর প্রনয়ে জড়িয়ে পরে, তু এর
অজান্তে। চিটা আর ইটির গোপন প্রনয় অভিসার এক পর্যায়ে তু জানতে পারে। তখন তু
এর মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পরে। তু আস্তে আস্তে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে
পরে।যা সে কাউকে বোঝাতে পারে না। ❤❤❤ ❤❤❤
চিটা তু কে অনেকভাবে বোঝানোর চেষ্টা করে এবং মিথ্যে আশ্বাস দেয়।
মিথ্যে স্বপ্ন দেখায়। চিটার এই চিটারি যখন তু বুঝতে পারলো তখন তু তার সব
কিছু হারিয়ে ফেলে। তু বড় একা হয়ে যায়। তু এখন জোর করে ভালো থাকার বৃথা
চেষ্টা করে। জোর করে ঠোঁটের কোনে হাসি ধরে রাখার চেষ্টা করে। সে একরাশ
কষ্ট তার বুকের মধ্যে চেপে রাখে। এভাবেই তু এর দূর্বিসহ দিনগুলো কাটছিল।
তু এর মানসিক অবস্থার অবনতি দেখে তু এর পরিবার সিদ্ধান্ত নেয়
নতুন কোন একটা জায়গায় বসবাস করার। তাই তু এর পরিবার তু কে নিয়ে নতুন একটা
পাড়ায় বসবাস শুরু করলো। ঐ পাড়ার পুরাতন এক চড়ুই পরিবারের বড় ছেলে
রিয়েল। তু এর সাথে প্রতিদিন রিয়েল এর অল্প-স্বল্প কথা হতো। কিছুদিনের
মধ্যেই ওদের ভিতর একটা ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হলো। এখন ওরা প্রায়ই এক সাথে
ঘুরতে বেড়োই। রিয়েল খুব খুশি তু কে পেয়ে। তু ও মনের অজান্তে রিয়েলকে পছন্দ
করে ফেলে। কিন্তু তু এর ভয় হয়, রিয়েল যদি চিটার মতো একসময় ফেক হয়ে সামনে
আসে। তখন তু কি সেই কষ্টের ধাক্কাটা সামলে উঠতে পারবে? খুব ভয় হয় তু এর। তু
বুঝতে পারে না তার কি করা উচিৎ। চিটার স্মৃতি গুলো তু এর মনে ঝর তোলে। তু
আনমনা হয়ে যায়। রিয়েল বুঝতে পারে তু এর মনে ঝড় চলছে। তু সব কখা বলতে চায়
রিয়েলকে। কিন্তু সবটা বলতে পারে না। রিয়েল বুঝে নেয় তু এর অব্যক্ত কথা।
😈 😈😈 😈 দিনটা ছিলো বৃহস্পতিবার।আমি আর আমার বন্ধু আনিস ১০ টায় রাতের
খাওয়ার পর বিভন্ন বিষয় নিয়ে গল্প করছি। গল্প করতে করতে কখন যে দিনটা শেষ
হয়ে গেল টেরই পেলাম না। আর শুক্রবার মানেই আমাদের কাছে ঘুমদিবস। তাই
তাড়াতাড়ি ঘুমানোর কোন ইচ্ছে ও নাই। তাই দুই বন্ধু বাইরে থেকে চা খেয়ে
আসার সিদ্ধান্ত নিলাম। চা খেয়ে রুমে আসতে রাত তখন ১ টা বাজে। আর এদিকে
চোখের ঘুমও নাই হয়ে গেছে দুজনের। তাই আমরা আবার গল্প শুরু করলাম। । । ।
গল্প করতে করতে রাত তখন প্রায় ৩ টা। আনিসের একটু ঘুম লাগতে শুরু
করছে। কিন্তু আমার চোখে ঘুমের লেশমাত্র ও নেই। তাই আমি আনিসকে বললাম, বন্ধু
যদি জ্বীন-ভূত দেখতে পারতাম তা হলে জীবনের একটা ইচ্ছে পূরন হতো। আনিস খুব
গম্ভীরভাবে আমাকে জ্বীন নিয়ে ফাজলামি করতে মানা করলো। ও আমাকে বললো আমাদের
রুমের বাইরে যে আম গাছটা আছে ঐ গাছটায় সমস্যা আছে। আমি কৌতুহলের সাথে বললাম
কই আমার তো কখনো মনে হয় নি। ও আমাকে বললো ও এইসব প্যারানরমাল বিষয় আগে
থেকে আঁচ করতে পারে। আমি তখন ওকে বললাম বন্ধু জ্বীনের সাহস খুব কম তা না
হলে তো একটু সৌজন্যসাক্ষাত ও তো করতে পারতো। আনিস চুপ। আমি আবারএ বললাম
দোস্ত ওদের হার্টবিট খুব দূর্বল। যদি ওদের সাহস থাকতো ঠিক ই এসে দেখা করতো।
এবার আনিস আমাকে গম্ভীরভাবে বললো, তুই কি সত্যি ই জ্বীন দেখতে চাস? আমি
বললাম দেখতে চাই মানে পারলে কথা ও বলতে চাই।
আনিস তখন গম্ভীর ভাবে বললো সোজা হয়ে শুয়ে উপরের দেয়ালের দিকে ২মিনিট তাকিয়ে
থাকতে। আমি ওর কথামতো তাকিয়ে আছি। ৫মিনিট তাকিয়ে থাকার পরও যখন কিছু দেখতে
পেলাম না তখন আনিসকে ডাক দিলাম। আনিস একদম চুপ। আমি এবার আরও জোরে ডেকে
বললাম, কি রে ঘুমায়ে পড়লি? তোর জ্বীন তো ভয়তে দেখা দিলো না। আনিসের তাও
কোন সাড়া পাওয়া গেল না। এবার আমি উপুড় হয়ে শুয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করলাম।
কিন্তু ঘুম আসছে না। তাই সোজা হয়ে উপরের দেয়ালের দিকে তাকাতেই আমি চিৎকার
করে উঠে বসলাম আর বললাম, এইইইই এট্টাটাআ কিইইইই হচ্ছে!!! মাত্র ৫কি ৬
সেকেন্ড হবে। তারপর নাই। আমি আনিসকে ডাকলাম। কোন সাড়া নেই। আরও জোরে
ডাকলাম। এবার ও খুব শান্তকন্ঠে বললো রুমের জানলাটা দিয়ে দে। আমি জানলা বন্ধ
করতে গিয়ে তাড়াহুড়োর কারনে কিংবা ভয়ের কারনে অথবা অন্য কোন কারনে আমার
হাত কেটে রক্ত ঝরে। আমি তা পাত্তা না দিয়ে আনিসকে বললাম তুই কি কিছু
দেখছিস? আনিস আমার কথার উত্তর না দিয়ে বলল, তুই কি দেখছিস? আমি বললাম কিছু
না। ও তখন বললো, কিছু না হলেই ভালো। আমি আর কিছু না বলে শুয়ে থাকি আর ভাবি
সত্যিই কি কিছু দেখছি না কি সব মনের ভুল। পৃথিবীর এমন কিছু কিছু ব্যাপার
আছে যার হয়তো কোন ব্যাখ্যা নেই। সত্যিই অদ্ভুত।